Wednesday, August 8, 2018

মোহাম্মদ অংকন'র সেরা শিক্ষার্থী লেখক পুরস্কার অর্জন


সাহিত্য খবর: দৈনিক ইত্তেফাক সেরা শিক্ষার্থী লেখক পুরষ্কার পেল নাটোরের সিংড়ার উদীয়মান কবি ও শিক্ষার্থী মোহাম্মদ অংকন (২১)। বুধবার দুপুরে দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যালয়ে লেখকের হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয় যার অর্থমূল্য ৫,০০০ টাকা। এ বিষয়ে ইত্তেফাকের হিসাব রক্ষক মিসেস কান্তা বলেন, ‘ইত্তেফাক পরিবার লেখকদের প্রতি বরাবরই যত্নবান। তাই শিক্ষার্থী লেখকদের কথা বিবেচনা করে মতামত বিভাগে ‘তরুণ প্রজন্মের ভাবনায়’ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের লেখা সপ্তাহে চারদিন প্রকাশ করা হয় এবং তাদের মধ্যে থেকে বাছাইকৃত সেরা শিক্ষার্থী লেখকদের পুরষ্কৃত করা হয়। ইত্তেফাকের নিয়মিত লেখক অংকনকে অভিনন্দন জানাই।’ মোহাম্মদ অংকন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যয়নরত। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজ ও দেশের নানা সমস্যা, অনিয়ম ও করণীয় নিয়ে জাতীয় দৈনিকগুলোতে নিয়মিত লেখালেখি করেন। তার লেখা প্রতিদিনই কোনো না কোনো পত্রিকায় প্রকাশ হবেই। এমন কি ভারতের কলকাতায়ও তার লেখাসমুহ প্রকাশ হয়। সেরা লেখক পুরষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো লেখকই টাকার জন্য লেখেন না। তবে লেখালেখির জন্য পুরষ্কার পাওয়াটা বেশ সম্মানজনক, তার অর্থমূল্য যাইহোক না কেন।’ তবে পুরষ্কারের ব্যাপারে তার রয়েছে গুরুত্বর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘আমি লেখার জন্য পুরষ্কারে ঠিকই মনোনিত হই। কিন্তু সে পুরষ্কার পেতে পেতে পুরষ্কার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ইত্তেফাকে ২০১৭ সালের মে মাসে আমার লেখা কলাম ছাপা হয়। পুরষ্কার ঘোষণা করা হয় চলতি বছরের ১ লা জানুয়ারী। পুরষ্কার হাতে পেলাম আগস্টের ৮ তারিখে। এ বিষয়ে কোনো কর্তৃপক্ষেরই দীর্ঘসূত্রীতা কাম্য নয়। আরেকটি পত্রিকাতে শিশুতোষ গল্পের জন্য পুরষ্কারে মনোনিত হয়েছি। দেখা যাক কবে হাতে পাই।’ উল্লেখ্য যে অংকন নাটোরের চলনবিল সিংড়া উপজেলার নুরপুর গ্রামের মোঃ গোলাম মোস্তফার (মন্ডল) দ্বিতীয় ছেলে। তার বাবা একজন কৃষক। তারা তিন ভাই। ছোটবেলা থেকেই ভাল ছাত্র হওয়াতে ও লেখালেখি করে সুনাম অর্জন করায় তার বাবা-মা গর্বিত। অংকনের পুরষ্কার প্রাপ্তির কথা জেনে সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মোল্লা এমরান আলী রানা, সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ, রাকিবুল ইসলাম, এনামুল হক ও আবু জাফর সিদ্দিকীসহ অনেকে শুভেচ্ছা জানান। তারা বলেন, ‘অংকন শুধু একজন মেধাবী ছাত্র নয়, সে একজন দক্ষ লেখকও। তাকে আমরা বিভিন্ন সময় সামাজিক কর্মকান্ডেও পেয়েছি। সিংড়ার বিভিন্ন সাহিত্য সংগঠন থেকেও সে পুরষ্কৃত হয়েছে। তার ভবিষ্যৎ সফলতা কামনা করি।

Monday, June 11, 2018

মেঘের পালক ।। ইউসুফ আউলিয়া

আকাশের বুক চিরে নামে ঝুমুরঝুমুর বৃষ্টি,
কুয়াশার ভাজ অন্ধকার ঘর যায় না মেলা দৃষ্টি। 
বৃষ্টিরা আজ খই ভাজে দ্যাখ্ টিনের চালের পরে,
দমকা বাতাস আঘাত হানে দুখিনি মার ঘরে।
গাছ গুলো দ্যাখ্ কেমন করে জলের ছোঁয়ায় হাসে,
শিকড় বাকল মাটির টিলা বৃষ্টি জলে ভাসে।
খাল বিল ডোবা নদী নালা ভরে যাচ্ছে জলে,
ব্যাঙেরছাতা ভেসে গেলো জলের রাশির দলে।
মুখ খুলেছে গোলাপ জবা মেঘের কানাকানি,
গোলাপ জানে তারি সুখ ভাই আমরা কি সব জানি?
উচাটনে মাছের খেলা জলের স্রোতে আসে,
পুটি মাছের গায়ে দেখো সিঁদুর টানা ভাসে।
কাঁথার বুকে লুকিয়ে পড় ওরে দস্যি ছেলে,
এখন যাসনে বাহিরে তুই দ্যাখ্ জল কেমন খেলে।
কলার পাতা ঝড়ে চিরে হাওয়ায় ওঠে দুলে,
পাখির বাসা জলে ভেজে দাঁড়াবে কোন কূলে ?
মেঘের পালক ঝরে পড়ে বাংলার উঠান জুড়ে,
বৃষ্টির জলে মাটি চিরে ওঠে বৃক্ষ ফুঁড়ে।
সবুজ ঘেরা গাছের পরে ডানা মেলে আকাশ,
জলে ভাসে কদম ফুলের মিষ্টি লাগা সুবাস।
বার বার আসুক মেঘের পালক আকাশের বুক বেয়ে,
চাষির মুখে ফোটে হাসি বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে।

Tuesday, May 29, 2018

গভীর কালো ।। আবু সাহেদ সরকার

চুপসে যাওয়ার দিনকি তবে এলো ফিরে!
আলো এখন গভীর কালো হৃদয় ঘিরে।
যখন-তখন তাকাই ফিরে তোমায় ভেবে,
হয়তো একটু সুখের অংশ আমায় দেবে।

Wednesday, May 23, 2018

অনন্ত যাত্রা

কবি-মাসুদ পারভেজ
সেদিন এই চোখে আর সকাল হলো না,
চোখ হাত পা দেহ তোমাকে খুঁজল না।
সংসারে থাকার অধিকার হারিয়ে ফেলায়
শেষ ঠিকানা গোরস্থানের কোন এক কোণায়।
-
শূণ্য বিভীষিকাময় তিমির রাত্রির ঘরে,
ব্যস্ত যাপিত জীবনের সব হিসেব নিয়ে।
তোমাদের আকাশে যখন মেঘ রিমিঝিমি বৃষ্টি ,
আমার চারিপাশে অভিশাপ্ত আগুন আর আগুন;
আমি জ্বলছি আর জ্বলছি;
অসহায়ত্বের চিৎকার তোমাদের কানে পৌঁছেনি;
তোমাদের হাসি থামেনি।
-
তোমাদের কে অবহেলা আর অপূর্ণতার দীর্ঘশ্বাস_
বিষাক্ত সাপের একেকটি ছোবল,
প্রবল আজাবের হাতছানি ।
আমি জানি,আমি কখনোই ক্ষমার যোগ্য নই।
-
তবে তার তরী নেই, যার তীর নেই, কুল নেই।
মুকুলে যার ধরেছে অসুখ, কিসে তার সুখ।
এপার ওপার কেহ নেই তার একটু সুখ সাধ বার।
-
আমি তোমার ছিলাম না, তোমাদেরও না;
নিয়মের ছিলাম না, কখনো নিয়মেও না।
এপার ওপার কেহ নেই, নেই বা কোন মাত্রা,
অনন্ত অভিশাপ নিয়েই আমার অনন্ত যাত্রা।

Tuesday, May 15, 2018

দখিন হাওয়া


কবি-ইউসুফ আউলিয়া
বেলা নেমে এলো আঁধার ছেয়েছে আমাদের এই ঘরে,
দখিন হাওয়া কেঁপে কেঁপে ওঠে নিভে যায় বাতি ডরে। 
প্রজাপতি পরি দুটি পাখা মেলে ছুটে চলে দলে দলে, 
চোখে পড়ে ছায়া আকাশের মেঘ আমাদের কালো জলে। 
ধানের গন্ধে হৃদয়টা ভরে আকুল ব্যাকুল মন, 
দূর পথে হাঁটি বুকে চেপে মাটি এমনি কাটুক ক্ষণ। 
দখিন হাওয়া নিয়ে যাও কথা দিও তা প্রিয়ার কাছে, 
জোনাকির আলো নাহি খেলা করে শূন্য স্বপন নাচে। 
রাখালের মুখে আমি শুনি গান হিয়াতে পাওয়া দুখ, 
আমারি মতন তার বুঝি হায় আঁড়ালে প্রিয়ার মুখ। 
দখিনের বায়ু ছুটে চলে বেগে মেঘের পাহাড় নিয়ে, 
আমি চেয়ে দেখি আকাশের গায়ে মেঘে থাকে বুঝি পিয়ে। 
চোখ পেয়ে জল দেহ পরিমল ভেজে বরষার মতো, 
ও মেঘের ব্যথা নেমে আয় বুকে তোরি দুখ নিয়ে যতো।

Thursday, May 3, 2018

ধিক্কার

কবি-ইউসুফ আউলিয়া
হাজার বছরের ব্যথা বুকে ধরে চুপ ছিলাম, 
কিন্তু আর না তোমার অত্যাচারে আমি জর্জরিত 
 হে মহা বৃক্ষ ; তোমার শাখা-প্রশাখার ছত্রছায়ায় 
কে আমার ভাগ্যটা লিখল এমন করে? 
হে মহা বৃক্ষ ; তুমি বৃহৎ আমি ক্ষুদ্র আমি 
তোমার অত্যাচারে জর্জরিত 
কোন পথিক এলে বসে তোমার ছায়া তলে 
আর পাতা ছিঁড়ে নিয়ে যায় আমার 
বল তুমি যদি না থাকতে পথিক কি আসতো? 
আর আমাকে ক্ষতবিক্ষত হতে হতো না। 
তোমার জন্য আমি সূর্যের উত্তাপ ছিটেফোঁটাও পায়নে, 
আমার অধিকার থেকে আমি বঞ্চিত অপুষ্টি বাসা বেঁধেছে 
আমার সারা অঙ্গ জুড়ে, 
আমার দিন শুরু হয় তোমায় দেখে সন্ধ্যা আসে তোমায় দেখে 
অথচ তুমি দেখতে পাও বিশাল আকাশ চন্দ্র সূ্র্য গ্রহ তারা নক্ষত্ররাজি 
তোমার অঙ্গ থেকে পাতা খসে পড়লেও সেটা আমার ওপর বর্তায় 
বৃষ্টির জলে তুমি যেভাবে স্নান কর সেটাও আমি পারিনে, 
পারিনে তোমার মতো সারানিশি শিশির জলে ভিজতে 
তারা ভরা জ্যোৎস্না আকাশ দেখতে। 
হে মহা বৃক্ষ ; তুমি কি এ কথা জানো? 
" বেশি বাড়লে ঝড়ে ভাঙে..." 
তুমিও ভাঙবে যে দিন তুফান উঠবে হবে এক মহাপ্রলয় 
তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে, 
তুমি হারিয়ে যাবে গভীর সুমদ্র স্রোত ধারায়। 
তোমার প্রতি এই আমার চরম ধিক্কার সেই দিন নেব আমি 
বুক ভরে একটু স্বস্তির নিশ্বাস।

Thursday, April 19, 2018

তুমি হীনা আমি


কবি-ইউসুফ আউলিয়া
হৃদয় রাঙিয়া চলে গেলে তুমি দূরপর দেশে কবে, 
আমি পুড়িতেছি বিরহ জ্বালায় এমনি পুড়ি গো তবে। 
 পথ হারা হয়ে তুমি আমি আজ সর্বহারা দু'কূলে, 
আমি যে ছিলাম তোমারি নয়ন সে কথা গিয়েছো ভুলে ? 
তোমারি অরুণ রাঙা হাত দুটি রেখেছিলে হাতে সখি, 
বুঝিনি সেদিন রাঙা রেখা হাত জল এনে দেবে চোখি। 
উত্তর বায়ু যায় বয়ে একা পাইনে সুবাস আর, 
দিলখানি নিয়ে অন্তর ভরে ব্যথা দিলে উপহার। 
কেশের সুবাস ছুটে নাহি আসে আমার নাকের দোরে, 
মনে হতো রোজি লেবু ফুল ফোটে কোন্ হাওয়ায় ভোরে। 
আমারে কাঁদিয়া সুখের আদরে থাকো তুমি বড় সুখে, 
বুঝিলাম শেষে সুখ নেই প্রেমে তাই আমি মরি দুখে। 
আমি যদি আগে বুঝিতাম ইহা মারবে আমায় ছলে, 
নাহি পড়িতাম প্রেম দরিয়ায় ভাসিতাম কি গো জলে? 
দিন আসে যায় রাত পিছু ধায় এমনি সময় কাটে, 
দিন গুনি আমি কবে যে উঠিবো মরনের মরা খাটে। 
নয়ন ছিড়িয়া জল পড়ে গড়ি নাহি পারি দিতে বাঁধ, 
তোমারি সহিত হৃদয় মিলিয়া মিটিলো গো প্রেম স্বাদ। 
বসি গাছ তলে পাতাগুলো ঝরে আমারি কাঁদনে হাই, 
কাঁদে পাখি ফুল জল ভরা কূল তুমি নিষ্ঠুর তাই। 
যাবে যদি চলে কেনো এসেছিলে দুই হাতে নিয়ে প্রেম, 
হৃদয় কাঁড়িয়া নিঃস্ব করিয়া খেলে গেলে শুধু গেম।

Monday, April 16, 2018

শোনো মেয়ে


কবি-সাইদুল ইসলাম
একলা আমি চলছি পথিক 
জীবন চলার পথে, 
কাউকে খুঁজিনি ও মেয়ে 
তুমি এসো রথে। 
আকাশ ভরা স্বপ্ন দিব 
দিব ভালোবাসা, 
আঁধার রাতে জোৎস্না সাজবো
পূর্ণ করব আশা। 
নিশিরাতে গল্প করব 
তুমি আমি দু'জন, 
আদর করে দিব চুমি 
ফুল সজ্জায় সজন। 
আউলা কেশে বাউল সেজে 
আমি হবো সুর গান,
রিমঝিম সুরে গান শোনাব 
রাঙাব মেয়ে মন প্রান

Tuesday, April 3, 2018

পাহাড় ও মেঘের কথোপকথনঃ শিশু ধর্ষণ

লেখক-সৈয়দ আসাদুজ্জামান সুহান

কিছু মেঘ দলবেঁধে গান ধরে আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক সময় হঠাত্ একটা মেঘ একটি পাহাড়ের চূঁড়ায় এসে ধাক্কা খেল। মেঘ পাহাড়ের কাছে বিনয়ের সাথে ক্ষমা চাইলে, পাহাড় খুব গম্ভীর ভাবে হেসে ক্ষমা করে দিল। মেঘ তখন সাহস নিয়ে পাহাড়ের সাথে গল্প করা শুরু করলো।
মেঘঃ ও পাহাড় ভাই, কেমন আছো তুমি?
পাহাড়ঃ এই তো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি। তুমি নিশ্চয়ই বেশ ভালোই আছো। মনের আনন্দে গান গেয়ে ভালোই তো ঘুরে বেড়াচ্ছো।
মেঘঃ হুম, তা ঠিক বলেছো কিন্তু তোমার গলায় কেমন যেন অভিমানী সুর। তোমার কি হয়েছে বলো?
পাহাড়ঃ কি বলবো বলো, দিনে দিনে আমার ভূপৃষ্টের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে কিছু মানুষ, দাঁড়িয়ে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
মেঘঃ তোমার কথা শুনে খুব কষ্ট পেলাম। তবুও তোমার সময় কাটে ভালো। তোমার সমস্ত শরীর জুড়ে সবুজ অরণ্য, কতো গাছগাছালি, কতো পশুপাখি, কতো গান আর কতো সুর, আহা.. তোমার কি আনন্দ...
পাহাড়ঃ হা হা হা... সেটা অবশ্য ঠিকই বলেছো কিন্তু ওই যে কিছু মানুষের কথা বললাম। ওরা শুধু মাটি কেটে নেওয়া পর্যন্ত ক্ষান্ত হয়নি। দিনে দিনে আমার গাছগাছালি কেটে উজাড় করে দিচ্ছে, পশুপাখি গুলো মেরে ফেলছে। মাঝেমধ্যে আমার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়, পশুপাখি গুলো পালিয়ে যাচ্ছে আরও গহীন অরণ্যে। আমিও ওদের বিদায় দিচ্ছি, মানুষের কাছে থেকে দূরে গিয়ে বাঁচুক।
মেঘঃ সত্যি তোমার কথাগুলো শুনে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেছে। মানুষ যে কতোটা নিষ্ঠুর, কতোটা নির্মম, ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। আচ্ছা, এই নিষ্ঠুর মানুষদের সম্পর্কে কিছু বলো।
পাহাড়ঃ এদের সম্পর্কে কি বলবো বলো, লজ্জা..!! লজ্জা..!! লজ্জা..!!
মেঘঃ কি হলো পাহাড় ভাই, তোমার চেহারা এভাবে ফ্যাকাশে হয়ে গেল কেন?
পাহাড়ঃ মানুষ সম্পর্কে কোন প্রশ্ন করো না মেঘ, আমার ভীষণ কষ্ট হয়। কি বলবো ওদের কথা, কতো অন্যায় অবিচারের সাক্ষী হয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি।
মেঘঃ তবুও তুমি বলো, আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে। এই মানুষদের অন্যায় অবিচার থেকে আমরাও রেহাই পাচ্ছি না। ওদের কারণে দিনে দিনে আমাদের পরিবেশ সাংঘাতিক রকম দূষিত হয়ে যাচ্ছে। তাই এই মানুষ গুলো সম্পর্কে জানতে চাই।
পাহাড়ঃ বেশ, তবে শোন। আমি ওদের হাজার হাজার অন্যায় অবিচার দেখেছি আর নীরবে সহ্য করে গেছি। এই তো, কিছু দিন আগের একটা রাতের ঘটনা বলি, শোন তবে।
মেঘঃ হ্যাঁ, আমিও খুব অধীর আগ্রহে বসে আছি, শুরু করো। ওই রাতে কি হয়ে ছিল?
পাহাড়ঃ হঠাত্ করেই মাঝ রাতে একটি বাচ্চা মেয়ের চিত্কার করা কান্না শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
মেঘঃ বাচ্চা মেয়েটির কি হয়ে ছিল পাহাড় ভাই?
পাহাড়ঃ উহ্, কি বলবো তোমাকে, লজ্জা..!! লজ্জা..!! লজ্জা..!!
মেঘঃ ধেত্, আসল ঘটনা বলতো তুমি, সেই কখন থেকে বসে আছি। কি হয়ে ছিল ওই বাচ্চা মেয়েটির সাথে?
পাহাড়ঃ আমার ঘুম ভাঙতেই দেখলাম কিছু নরপিশাচের দল ওই বাচ্চা মেয়েটিকে উলঙ্গ করে পালা ক্রমে ধর্ষণ করে যাচ্ছে। খুব সুন্দর পরীর মতো চেহারা বাচ্চা মেয়েটি চিত্কার করে কান্না করে যাচ্ছে আর বারে বারে জ্ঞান হারাচ্ছে।
মেঘঃ কি বলছো পাহাড় ভাই...!!! এটাও কি সম্ভব...!!! বাচ্চা মেয়েটির কান্না শুনে ওদের কি একটুও দয়া মায়া হয়নি???
পাহাড়ঃ ওদের আবার দয়া মায়া, হেহ্... বাচ্চা মেয়েটি যতোই চিত্কার করে কান্না করে যাচ্ছিল, ওরা তখন আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে ছিল।
মেঘঃ তোমার কথাগুলো শুনে মানুষের উপর প্রচন্ড রকম ঘৃণা জন্মে গেছে। যাইহোক, তারপর কি হলো বলো?
পাহাড়ঃ বাচ্চা মেয়েটির তলদেশ দিয়ে রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছিল আর সেই রক্ত দিয়ে ওরা হোলি খেলা করে ছিল। আর বলতে পারছি না মেঘ, আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
মেঘঃ আমার চোখে পানি চলে এসেছে, তবুও শুনতে চাই। দয়া করে আমাকে পুরো ঘটনাটা বলো, যতোই কষ্ট হউক তোমার। বাচ্চা মেয়েটির সাথে শেষ পর্যন্ত কি হয়ে ছিল?
পাহাড়ঃ বাচ্চা মেয়েটি এক সময় থেমে গেল। আর কোন শব্দ করছে না। নিথর শরীর আমার বুকে রেখে শুয়ে রইলো কিন্তু তখনও অত্যাচার অব্যাহত ছিল। এক সময় নরপশু গুলো ক্লান্ত হয়ে গেল। তখন বুঝতে পারলো, বাচ্চা মেয়েটি এখন মৃত।
মেঘঃ উফফঃ কতোটা নিষ্ঠুর... কতোটা নির্মম... তুমি ঠিকই বলেছো, ওরা মানুষ নয়, ওরা পশু। তারপর কি হলো বলো???
পাহাড়ঃ ওদের চেয়ে আমার পাহাড়ি পশু গুলো ঢের ভালো। ওরা হচ্ছে নরপশু, সবচেয়ে নিকৃষ্ট পশু।
মেঘঃ হ্যাঁ, তা তো বটেই। যাইহোক, তারপর কি হলো???
পাহাড়ঃ তারপর ওরা মেয়ে বাচ্চাটিকে আগুনে পুড়িয়ে চলে গেল। পরীর মতো সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চা মেয়েটির শুধু কঙ্কাল টুকু অবশিষ্ট রইলো।
মেঘঃ সত্যি, তুমি ঠিক বলে ছিলে, লজ্জা..!! লজ্জা..!! লজ্জা..!! এই ঘটনা শুনে আমার চিত্কার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে হচ্ছে বজ্রপাত করে এর প্রতিবাদ করি।
পাহাড়ঃ তবে তাই করো। আমি হয়তো পারছিনা কিন্তু তুমি চাইলে পারবে মেঘ, তুমি পারবে, অবশ্যই পারবে।
মেঘঃ একদিন আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী ধ্বংস হবে এই মানুষ গুলোর অন্যায়, অবিচার ও অত্যাচারে। যাইহোক, আজকে গেলাম, তুমি ভালো থেকো।
পাহাড়ঃ হুম, একদম ঠিক বলেছো। আমার আর ভালো থাকা, জানিনা কতো দিন দাঁড়িয়ে থাকতে পারবো। তুমিও ভালো থেকো।