Monday, January 23, 2017

শিশিরের চোখে রশ্মি

লেখক-মামুন অপু
রশ্মির প্রথম ছেলে সন্তান হয়েছিলো বিয়ের দু বছর পর। কত স্বপ্ন, কত কল্পনা, কত অনুভূতি রশ্মির মনটার ভেতর খেলেছিলো তা শুধু রশ্মিই জানে। একটা মেয়ে যখন মা হবার সপ্ন দেখে, সে স্বপ্ন পূরণে মরিয়া হয়ে উঠে। রশ্মির ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। বাচ্চা পেটে আসার পর থেকেই কেমন জানি চাপা আনন্দে মনটা ভরেছিলো রশ্মির। পেটের উপর বারবার হাত বুলাচ্ছে, ঘুমের ভেতরও পেটের উপর আলতো করে হাত রেখে ঘুমায়। মাঝেমাঝে সে ঘুম থেকে চমকে উঠে। বাচ্চাটা যেন হঠাত মা বলে ডেকেছে। রশ্মির শরীর কাঁপতে থাকে। পরক্ষণে শরীরের ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসে।আস্তে আস্তে নিজের ভেতর বাচ্চাটার নড়া চড়া শুরু করে, তখন পেটের উপরে হাতটা আস্তে করে রাখে আর আলতো করে হাত বুলিয়ে মনে মনে বলে, ঘুমাও দুষ্টমি করো না, মা ব্যথা পাচ্ছি। রশ্মির মনটা ভরে উঠে আনন্দে। সময় পার হয়ে যাচ্ছে, ক্রমাগত রশ্মির শরীরের ভেতর আরেকটা মানুষের অস্তিত্বও ভাড়তে থাকে। রশ্মির শারীরিক কষ্ট হলেও বাচ্চার জন্য, মা হবার জন্য এ শারীরিক তীব্র যন্ত্রনাটা খুবই তুচ্ছ মনে করে শরীরকে মোটেই পাত্তা দেয় না। রশ্মির বিয়ে হয়েছিলো দু বছর আগে দিপুর সাথে। দিপু খুব ভালো ছেলে। একটি প্রাইভেট ব্যাংকে জব করে। বিয়ে হয়েছিলো তাদের দুজনের পছন্দ অনুসারে।বিয়ের পরে দিপু রশ্মির সকল দায়িত্ব কর্তব্যের সাথে পালন করছে। দিপুটাও একটু অন্যরকম, খুব রোমান্টিক, রশ্মির পেটে বাচ্চা আসার পরে, বাসার রান্নাটাও রশ্মিকে করতে দেয়না। কিন্তু রশ্মিও দিপুকে কোন কিছু করতে দেবেনা। তবু মাঝেমাঝে দিপু রশ্মির কাপড় গুলো ধুয়ে দেয়, রান্নার সব্জি কেটে দেয়, বিছানা গুছিয়ে দেয়, আর কাছে পেলেই রশ্মির গাল রাঙ্গিয়ে দেয় অজস্র চুমুতে। রশ্মিও দিপুর ভালোবাসা শরীর ও মন দিয়ে উপভোগ করে। দিপুর পাগলামি প্রথম প্রথম একটু বিরক্তিকর মনে হলেও এখন ঐসবই খুব ভালো লাগে। দিপু না করলেও চেয়ে নেবে, দুজনের মাঝে কোন জড়তা নেই, বিদ্রুপ নেই, অহংকার নেই, নেই কোন বাড়তি প্রত্যাশাও। রশ্মির বাচ্চা পেটে আসার পর দিপুও খুব আনন্দিত। রশ্মির কোলে শুয়ে পেটের সাথে কান লাগিয়ে বলে, শুন রশ্মি, তোমার পেটের বাবুটা আমাকে আব্বু বলছে। তখন রশ্মির বুকটা আনন্দে ভরে যায় আর মুখটা আনন্দে লাল হয়ে উঠে আগুনের রঙে। বাসাটা খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে দিপু আর রশ্মি মিলে। দুজনের মধ্যে খুব ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। ঝগড়া করা, সন্দেহ করা এসব কিছু কখনোই তাদের ভেতর স্পর্শ করেণি। শুধু ভালোলাগা আর ভালোবাসা। আদর স্নেহে দুজন দুজনার। রশ্মির বাবার বাড়ি সাভারে, ঢাকায় থাকে আত্মিয় সজন অনেকে। মাঝেমাঝে রশ্মির মা এসে মেয়ে জামাইকে দেখে যায়। দিপুর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে। সম্পর্কের বিয়ে হয়েছিলো দুই পরিবারের মতামতের উপর। দিপুর মা বাবাও বাসায় আসে বেড়াতে মাঝেমধ্যে । দু পরিবারে রয়েছে সুসম্পর্ক। গভীর রাত। দিপু আর রশ্মি ঘুমাচ্ছে। হালকা আলো রুমটাকে খুব সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছে। দিপুর হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গেগেলো রশ্মির চাপা কোঁকানিতে। দিপু বসে পড়লো। ডে-লাইট অন করে দেখলো রশ্মির শরীরটা নিথর হয়ে আছে। কয়েকবার ডাকা-ডাকি করেও কোন সাড়া পেলো না। সাথে সাথে হাসপাতালে ফোন করে এম্বুলেন্স ডাকলো। হাসপাতালে ভর্তি করানো হলো ইমার্জেন্সিতে। দায়িত্বরত ডাক্তার বিভিন্ন টেস্ট করে দিল খুব দ্রুত। দিপু খুব চিন্তায় পড়েগেল। গভীর রাত তাই কাওকে ফোন করে নি, সকালের অপেক্ষা শুধু। অপেক্ষার রাত ফুরায় না সহজে। ডাক্তার বললো, আপনার রুগিকে ইমার্জেন্সি অপারেশন করতে হবে, না হয় বাচ্চা এবং বাচ্চার মা দুজনেই আসঙ্কাতে রয়েছে। দিপু ক্রেডিট কার্ডে টাকা ফে করলো। অপারেশন থিয়েটারে রশ্মিকে নিয়ে গেল। এক ঘণ্টা লাগবে অপারেশন শেষ করতে। এক ঘণ্টা দিপুর কাছে এক হাজার শতাব্দি মনে হলো। দিপুর মাথাটা ঘুরছে। কি করবে দিশা পাচ্ছে না। এক ঘণ্টা পার হলো। ডাক্তার এসে দেখে দিপু বেঞ্চের উপর বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে। দিপুকে হালকা কিছু সেবা যত্ন নার্সরা করলো। জ্ঞান ফিরলো। জ্ঞান ফিরেই নার্সকে জিজ্ঞেস করলো, আমার রশ্মি কেমন আছে? নার্সরা জানাল, আপনার রুগি ঘুমিয়ে আছে। সে মোটামুটি সেভ, তবে আপনাদের বাচ্চাটা মৃত ছিল। দিপুর বুক থেকে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস বেরুল। দুপুরে রশ্মির জ্ঞান ফিরলো, দিপু বসে আছে রশ্মির মাথার কাছে, আলতো করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে রশ্মির মাথায়। রশ্মি জিজ্ঞেস করলো, আমাদের বাবুটা কেমন আছে গো? আর দেখতে কার মত হয়েছ? তোমার মত না আমার মত? দিপুর চেখ থেকে ঝরঝর করে পানি পড়তে শুরু করলো। রশ্মি বুঝে পেলেছে কী হয়েছে তার বাবুটার। রশ্মির দুচোখ বেয়ে কানের কিনার ধরে নেমে গেল কিছু লোনা অশ্রু, তার সাথে নেমে গেলো এক বুক স্বপ্ন, কল্পনা, আনন্দ।

Sunday, January 22, 2017

জীবেসেবা

কবি-আবুল কালাম আজাদ
জীবেসেবা কর যদি পশুকেও কর, 
নরাধম পশুটাকে দুই চাঁটি মারো । 
তারপর সে বেটাকে মারো জোরে চাপ : 
তাহলেই বলবে সে, "তুই আমার বাপ"| 
অসময়ে যদি তুমি ধর তার হাল, 
সুসময় এলে সে হবে তোর কাল । 
একটু তাকদ পেলে করে ফোঁস ফোঁস, 
ক্ষতি করে বলে, "তোর কপালের দোষ"|

Monday, January 16, 2017

প্রতিচ্ছবি

কবি-সাজ্জাদ হোসেন সাখাওয়াত 
অভাব অনটনে যাচ্ছি কশে 
তবুও যাই মিষ্টি হেসে। 
সমাজ বুঝেনা আমার মুখের ছলনা 
 দারুন অভাব যার হয়না তুলনা। 
দিবালোকে কষ্টের সাগরে ছুটে 
 প্রতিনিয়ত হচ্ছে ভুলত্রুটে 
দুবেলা অন্নর জন্য 
ভুলে যেতে চলছি পাপপুণ্য। 
সৃষ্টিকর্তা দেখে আমার অশ্রুজল, 
গভীর নিশিতে চোখ টলমল 
রম্য মঞ্চে কেউ বুঝেনা আমার ভাষা 
করে নাই কখনো কেউ কোণঠাসা। 
দিনে এনে দিনে খাই 
একটু রসিকার উপাই নাই। 
বেতন যাহা পাই 
একটু অন্ন প্রাণ বাঁচাতে নাই! 
জীবন প্রদীপ নিবুনিবু 
মুখের হাসি থাকে তবু। 
 আমি এই সমাজের প্রতিচ্ছবি 
মঞ্চে উপরে নির্বাক নিদারুণ নিরুপায় কবি।

দুঃখের বাসর

কবি-সায়েখ শীতল
 
আমি ভুল করে নাম বলি তোর 
ভুল করে তোর চোখে পরেছে নজর। 
কাজল আঁকা তীর চোখে 
মম-তা বিঁধেছে বুকে 
কাঁচা ফুল হয়ে আজ,ছড়ালি আতর। 
তোর মাঝে এতো রূপ, আগে দেখিনি 
ভাল বেসে ছিলি তুই,ভাল বাসিনী 
আমার এ অবুঝ মন 
ভুলে ছিলো পাওয়া ধন 
এতো কাছে পেয়ে তোরে, করিনি আদর। 
আজ কেন কাছে এসে,এই অবেলায়, 
জরিয়ে নিলি আমারে, যাদু মমতায়? 
তোর ঐ মধু বুকে 
আমার এই মাথা রেখে 
সুখেতে ভাসালি আজ,দুঃখের বাসর।

Sunday, January 15, 2017

জীবন সন্ধ্যা

কবি-সায়েখ শীতল
করুণা করো গো হে,প্রভু দয়াময় 
মজিয়াছে মন প্রাণ, ভুলের মায়ায়। 
রহিম রহমান তুমি 
দ্বীন দুনিয়ার স্বামী 
ক্ষমা করো পাপীরে, তার ওছিলায়। 
তোমার দেখানো মুক্তির, পথ ফেলে 
পাপিষ্ঠ চরণ শুধু ভুল পথে চলে। 
ভ্রান্ত মায়ার জাল 
মন হয় বেসামাল 
বৃথা লোভ জাগে মম পাষাণ হিয়ায়। 
দিলে সঙ্গী সাথী,পুত্র স্বজন 
এ সকল মায়া আজ নিছক স্বপন। 
আজ এই অসময় 
কেউতো আমার নয় 
আপনের মায়া শুধু মিছাই কাঁদায়। 
জমিজমা করে দান,দিলে মহা সাজ 
তোমার রাজ্য মাঝে, আমি মহারাজ 
সোনাদানা হিরা মতি 
জ্বেলেছে ভুলের বাতি 
হেরে গেছি প্রভু গো,তোমার খেলায়। 
বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে তোমাকে না চিনে 
সারা বেলা কাটিয়েছি ভ্রান্ত ধিয়ানে 
কি করে হলাম জ্ঞানী 
যদিনা তোমাকে চিনি? 
সেই কথা মনে হলো সন্ধেবেলায়।

চোর

কবি-আবুল কালাম আজাদ
শেয়ারের কোটিটাকা ব্যাঙ্কে রিজার্ভ 
চুরি করে নিয়ে কেউ পরে যে হিযাব।
হিযাবি বেহিসাবি কত করে লুটপাট, 
পুকুরটা চুরি করে করে চোটপাট । 
ঠাট-বাট যুৎসই হয়নাযে তাই– 
রাতদিন কেউ কেউ করে খাই খাই। 
 কেউ খায় মাঠঘাট, কেউ খায় হাট, 
 মনের পুজাতে আরও করে লুটপাট। 
গলাকেটে সুদ-ঘুষ উসুল করে, 
কসাই চামাড় গালি দেয় গরীবেরে। 
গরীবের নিশাঘোর হয় না যে ভোর, 
ক্ষুধার জ্বালায় তাই হয় তারা চোর। 
বিবেকের রায় নিয়ে দেখহে সুজন, 
তারা চোর হলে তুমি কোন মহাজন ?

Thursday, January 12, 2017

কিছু কথা

কবি-এমএইচ প্রিন্স
কিছু কথা ছিল যা তুমি শুনতে চাওনি 
মনের দূঃখ গুলোকে বোঝাতে দাওনি 
কিছু কথা ছিল যা তুমি বলতে পারনি
চোখের জল গুলো কে ঝরতে দাওনি 
কিছু অভিমান যা তুমি দেখতে পাওনি 
দুঃখ,কষ্ট,সুখ কিছুই ভাগ করে নাওনি 
কিছু রাগ যা কখনও অনুভব করোনি 
ভুল বুঝেছ তবুও রাগ ভাঙাতে পারনি 
কিছু সত্য যা কখনোই জানতে চাওনি 
জিতে গেছো সবসময় কখনো হারোনি 
কিছু মূহুর্তো যা এখনো ভুলতে পারিনি 
এভাবেই হবে মরন তা কখনও ভাবিনি

Wednesday, January 11, 2017

কঙ্কাল

লেখক-হাদিউল হৃদয়
 
সবুজের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার বেহুলা নদীর পাশেই। ছোটবেলা থেকে গ্রাম-গঞ্জে মানুষ হয়েছে। তার কাছে ভূতের ভয় নেই বললেই চলে। অনেকের মুখে শুনেছে সন্ধ্যার পর বেহুলার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকি অশরীরীর দেখা মিলে। সবুজ কখনও এসব কথা বিশ্বাস করত না। ভয়ও পেত না।

একদিন সবুজ তার মামার বাড়িতে একটা কাজে, তার এক পরিচিত বন্ধুর মোটর সাইকেল নিয়ে যায়। ঐদিন বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। বন্ধুর বাজারে কাজ ছিলো দেখে সবুজকে বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে নামিয়ে দেয় এবং জিজ্ঞেস করে সমস্যা হবে কি? না, বলে বাড়ির পথের দিকে হাঁটতে শুরু করেম। খুব দ্রুতই রাতের আঁধারে চারপাশ ঢেকে যাচ্ছে। সবুজের সাথে কোনও আলো নেই। তবে বাড়ির পথ খুব একটা দূরের নয়। বাকা পথে ২০ মিনিটের সময়। আর সোজা পথে ৩০-৪৫ মিনিটের। বাঁকা পথ একটু জঙ্গলা এবং বেশ কিছু জায়গাতে কবর আছে। কিন্তু সেইদিন বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের খেলা সন্ধ্যা ৭ টায় থেকে। খেলা শুরু হতে মাত্র ১০ মিনিট বাঁকি। সবুজ সময় বাঁচানোর জন্য বাকা পথ দিয়ে রওনা হলো। মনে মনে ভাবসে সবাই চলে এসেছে খেলা দেখতে একসাথে খেলা দেখার কথা ছিল। কাউকে দেখতে পাচ্ছি না পথে। প্রায় ৫-৬ মিনিট হাঁটার পর সবুজের মনে হচ্ছে তার পিছনে পিছনে কেউ আসছে। পিছনে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। আবার একটু পরে ঝোপের পাশে ধপ করে কি যেন । হঠাৎ সবুজ থেমে গেল। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলো না। কিছুই দেখতেও পারল না। ভয়ে ভয়ে আবার হাঁটতে শুরু করল। সবুজ অনেক সাহসী ছিলো। 

রাস্তার দু পাশে ছিল ঝোপ। সবুজ পূর্বের পাশের ঝোপ উকি দিয়ে চমকে উঠলো। একটা সাদা কাপড় পড়া বেশ কিছু কঙ্কাল। একজন আরেক জনের হাত পা ভাঙ্গছে, কড়কড় করে কি যে খাচ্ছে এমন শব্দ সবুজের কানে বার বার ভেসে আসছে। ভয়ে ভয়ে সবুজ বলল, কে ওখানে? ওখানে কি হচ্ছে? বলার সাথে সাথে কঙ্কাল গুলো সবুজের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। দেখে সবুজ দৌড় দেয় এবং খানিকটা আসার পর অজ্ঞান হয়ে পরে থাকে রাস্তায়। 

জ্ঞান ফেরার পর সবুজ দেখে বাড়ির উঠানে। সামনে এলাকার সব মুরুব্বী এবং গঞ্জের বড় হুজুর বসে আছেন। উনাদের কাছে শুনতে পায় রাতে রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে পাশের বাড়ির রহিম চাচা দেখতে পান। এরপর আরও মানুষের সাহায্যে বাসায় নিয়ে আসেন।

আর্শ্চয়ের ব্যাপার যে পরের দিন সবুজের বাড়ি থেকে একটু দূরে দুটি আধ খাওয়া গরুর মৃত দেহ পাওয়া যায়। গরু দুটার শরীরের বাকি অংশ পাওয়া গেলেও মাথা থেকে পেট পর্যন্ত ছিল না।

রঙবেরঙ

কবি-আবুল কালাম আজাদ 
এই দুনিয়ার গোলকধাঁধা, চমক রঙবেরঙ — 
কেউ পড়ে ভাই ঘোমটা , কেউবা সাজে সঙ— 
 কারো ঢঙ দেখে অবাক — 
কেউ দেখো ভাই ধুর্ত শিয়াল কারোযে দুর্বিপাক || 
লুটে চেটে খেয়ে কেউরে করে খাইরে খাই— 
দুস্থ-অনাথ প্রান্তজনের শান্তি নাইরে নাই— 
আবার লুটপাটে কেউ সিদ্ধ করতে চোটপাটে দেয় ডাক 
দেখ কেউ সাজে ঐ চাতক পাখি, কেউবা চক্রবাক || 
 ইয়া মালিকে জাহান তোমার অবাক পৃথিবী — 
ছল-চাতুরীর নোংরা খেলা দেখোতো সবই– 
হায়! বাদ-মতবাদ বিভেদজলে কেমন ঘুর্ণিপাক , 
ওরে কেউ সে জলে খাচ্ছে খাবি কেউবা ঠেলে পাঁক ||

Sunday, January 8, 2017

জাগো মুসলিম

কবি-মামুন আব্দুল্লাহ্
জাগো দুনিয়ার মুসলিম জাগো 
ঘুমিয়ে থাকার সময় আর নেইতো, 
দেখো চোখ মেলে দেখো 
কাঁদে কত অসহায় নারী শিশু। 
বাতিলের রণসজ্জায় মিছে ভয় কেনো? 
তোমার সাথে আছে মহা শক্তিধর প্রভু, 
রাতের আধার হোক না যত কালো 
ঘনিয়ে আসবে ভোরের আলো। 
আত্মপরিচয়ে এবার তুমি দাঁড়াও 
ঈমানি বলে সামনে এগিয়ে যাও, 
আছে যত অপশক্তি পশু 
এই পৃথিবী থেকে তুমি তাড়াও। 
 নতুন করে পৃথিবীকে সাজাও 
দ্বীনের মশাল নাও হাতে নাও, 
মানুষের যত অধিকার ফিরিয়ে দাও 
এর পর তুমি শান্তিতে ঘুমাও।

Saturday, January 7, 2017

শৈশব

কবি-আবুল কালাম আজাদ 
সাত-সাগর আর তের নদী, দুর্গম-গিরিপথ, 
বন-আমাজন, মরুসাহারা— 
বাধার ঐরাবত ; অন্ধকারের– 
জঠরের বেড়াজালটা ছিঁড়ে, এসেছি এ ধরণীতে মুষ্টিবদ্ধ করে || 
মুষ্টিবদ্ধ, চক্ষুবন্ধ, গলাফাটা চিৎকার ; বলেছি, 
"হে পৃথিবী, মানো দাবি, দাওআমার অধিকার "| 
শুনে তখন বলে কতজন থামা ও মানিক শোর— 
আঁখি মেলে দেখ্ আলো ঝলমল সারা দুনিয়া তোর । 
পৃথিবীর সব আমারই ছিল সেই সে শিশুকালে, 
 বাঁধেনি আমায় তখনো কোন আইনের বেড়াজালে। 
হাঁটিহাঁটি পা পা আধো আধো বোল, 
 ধীরে ধীরে দুরে যায় সোহাগ ভরা কোল। 
তবুও শৈশব ছিল সুখ-শান্তিতে ভরা, 
তখনো বাঁধেনি কোন জটিল আইনধারা। 
দিনের মত দিন চলে যায়, স্বপ্ন কত ভীড়ে, 
ইচ্ছাগুলো দোলখেলে শিশু-মন মন্দিরে। 
সোনালী, দিপালী, লিলি— 
কাকফাটা দুপুরে সাথী জোটানো ওস্তাদ ছিল চড়ুইভাতির তরে। 
নাটাইঘুড়ি, আমচুরি আর ধুলোবালির খেলা , 
কে জানতো কিসের টানে সাঙ্গ হত বেলা। 
আস্তে আস্তে বিদায় নিল ছেলেবেলার দিন, 
দিনে দিনে বন্দী হলাম নিয়মের অধীন। 
স্বপ্নময় সে সময়, রাঙানো সেই বেলা, 
 কোন অজানায় হারালে সাঙ্গ করে খেলা। 
 উঁচু-নীচু জীবন টিলা, লক্ষ গিরি খাত, 
কোন সুদুরে শৈশব আজো মনকে করে মাত। 
 রঙে রাঙ্গা দিনের পরে বাউল যৌবন, 
বলে যেন মিছেরে মন যৌবনের মৌবন । 
এই জীবনের সারাবেলা, সারা ভবলীলা, 
ম্লান করে ঐ শৈশবের এলেবেলে খেলা ||

Friday, January 6, 2017

উজানভাটির মেয়ে


কবি-সাজ্জাদ হোসেন
নিস্তব্ধ মৌলভী বাড়ী 
আজ হেতা ছেড়ে তিপ্তি দিচ্ছে 
স্বামীর বাড়ী পাড়ি।। 
শত কল্পনার রাজ্য 
করে তার বিদায়ী লগনে 
হা হা কার 
মানুষ গুলা কেমন জানি স্বার্থপর। 
নব্য রাজ্য, সে রাজরানী 
নতুন করে গড়ে তুলবে 
রাজ্যর নতুন কাহিনী, 
কিন্তু এই কি হল? 
রাজ্যর সবাই রাজা 
কেউ শুনেনা কারো কথা 
সবার আদেশে হয় সাজা 
কিন্তু তিপ্তির কি হল? 
তিপ্তির মন আজ অদৃশ্য 
নেই আগের মত হাসি 
বলেনা মুক্ত পাখির মতো কথা 
অপলকে তাকিয়ে রয়। 
নিজের সাথে নিজে 
অন্যর সাথে কথা নয় 
দেখতে লাগে আনমনা 
ভাবতে থাকে কখন কি হয়।। 
স্মৃতি মনে পড়ে হেতা 
মৌলভী বাড়ী করে যথা 
নিজে নিজে হাসে 
কেউ নাই এই পরিবারের পাশে।।
মৌলভী বাড়ীর পাশে 
শুনা যেতো বাঁশির সুর 
আজ সব স্মৃতি 
সে সুর আজ বহুদূর। । 
মক্তবে ওস্তাদজী ছেলের 
দিকে অপলকে দেখা 
এই সব আজ 
স্মৃতি সাগরের আঁকা ।।
স্বামী প্রবাসে দিল্ পাড়ি 
তুচ্ছ আমার জীবন ছাড়ি 
মাস বছর চলে গেল 
খবর আমার নাই নিল।। 
একান্নবর্তী সংসাররূপ 
কাজে তিপ্তির মূল ধর্ম 
কে শুনে কার কথা 
কেউ বুঝেনা তিপ্তির মর্ম।। 
শাশুড়ি তাঁহার রাজ রাণী 
নন্দিনী করে কৃতী কাহিনী 
চলছে দুঃখের বেলা 
কাটছে সময় তিপ্তির একলা।। 
দিবা-নিশি সে ক্লান্ত 
দেহমন নাই শান্ত 
মাস বছর চলে গেল 
বাপের বাড়ীর খবর নাই এলো। 
নন্দিনী এসে শুধাইল 
বাপের বাড়ী অতিথি অাগমন 
খুশিতে আমি দিশেহারা 
চিৎকার করে বলি কে,কারা? 
বাড়ীর দরজা মুয়াজ্জিনের ধ্বনি 
বাজান ফাটালো বুঝি !জানি! 
শাশুড়ি কাছে আরতি করি 
মর্জি করে যেন ছুটি। । 
শাশুড়ি অনুমতিক্রমে 
 ক্ষেতের আই ধরে 
চলি ফেনী নদীর নাই মাঝি 
সাঁতার দিয়ে দিব পাড়ি 
জীবন রাখবো বাজি। । 
বাপের বাড়ীর দৃশ্য দেখে 
হই দিশেহারা বাজান, ভাবি, 
ভাই কে কোথায় তোরা? 
সবার নয়ন অশ্রু সিক্ত 
নাই কারে মুখে হাসি বাজান 
আমার মৃত্যু লগনে আমি 
বাজান রে ভালবাসি।
আমার সম্মুখে বাজান দিল 
অজানা দেশে পাড়ি কেন চলে গেলে? 
তোমার আয়না কে ছাড়ি। 
কয়েক দিন হল বাজান আমার 
গত কল্পনায় মনে উঠে 
বাজানের স্মৃতি শত।। 
ওপার থেকে কোন নেই তেমন 
সাড়া ভাবি সাহেবরা মনে 
হয় করতে চায় তাড়া। । 
বাজান ছাড়া এই বাড়ী শূন্য 
খনে খনে কেঁদে উঠে মন বাজানের জন্য।। 
কন্যা হয়ে জন্ম নাই 
কোথাও সুখ 
মুছে যেতে চলছে যৌবন 
ভেসে উঠছে সব দুখ।। 
বাড়ীর বাহিরে খোলা 
বিক্রেতার দিল ডাক 
বলে উঠে পোড়া কোপালি 
শাশুড়ি যে তোর রাগ।।
যেমনে পারছ স্বামীর বাড়ী যা চলে 
শাশুড়ি তোর অনেক খারাপ 
গাল মন্দ দিবে বলে।। 
ঠিক আছে যাবো 
শাশুড়ি বাড়ীর তরে 
শেষমুহুর্ত বাজানের স্মৃতি 
রেখে গেলাম অাপন ঘরে।। 
বাপের বাড়ী থেকে বিদায়কালে 
ঐ স্মৃতি পড়ে মনে 
বাজান আমার জীবিত থাকলে 
বিদায় দিতো এই লগনে।।
দীঘির পাড়ে বাজান ঘুমাও 
আমি যাচ্ছি স্বামী বাড়ী চলি 
বাজান গো আমার মাথায় 
হাত রেখে দাওনা কিছু বলি।। 
বাজান আমার একেবারে চুপ 
অজানা দেশ থেকে অপলকে দেখে! 
হে আল্লাহ, দয়াময় বাজানের কবর 
জান্নাতের টিকেট দাও এঁকে। 
কেঁদে কেঁদে স্বামী বাড়ী 
বাপের দেশ দিই ছাড়ি 
শাশুড়ি রাজ্য দিই পাড়ি।। 
দুঃখের দিন চলে যায় আমার 
ঘরে রাজ পুত্র জন্মনিল 
কেউ নাই পাশে 
পুত্র আমার দিকে ছেয়ে 
একটু একটু হাসে। 
পুত্র দিকে ছেয়ে নতুন 
পৃথিবী বয় 
এই পুত্র আমার দুঃখ খুলা 
করবে বোধহয় জয়।।
পুত্র আমার ইস্কুলে যায় 
শিক্ষক মহাদয় ভালো পায় 
হেতা সবার সমান তূল্য 
পুত্র কে করেনা অমূল্য। । 
বিদ্যা পীঠ থেকে এসে শুধাইল 
বন্ধু,শিক্ষক সবার গুন গাইল। 
এতসব শুনে 
খুশিতে ছন্নছাড়া 
প্রণাম কর দাদি কে! 
না হয় করবে তাড়া।
সর্বত পুত্র আমার 
করে ভালো ফলাফল 
তা শুনে খুশিতে 
চোখে আসে জল।। 
পুত্র আমার শহরে পড়তে 
যায় তাই ভাবিয়া দুঃখ 
আমার চলে যায় 
কিন্তু ক্ষণেক্ষণে কেঁদে 
উঠে মন আমার দোয়া 
আছে সারাক্ষণ। । 
কত ক্লান্তি লগ্ন দিলাম পাড়ি 
যৌবন সুখ শান্তি ছাড়ি এবার 
হয়তো একটু সুখের দিন 
মুছে যাবে অতীত সব বীণ । 
কিন্তু নিবুনিবু সুখের প্রদীপ 
আর জ্বলে নাই অকাল মৃত্যু 
হল নারীর এই পৃথিবীর মায়া ছাড়ি

Wednesday, January 4, 2017

টাকা

কবি-ফাতেমা জাহান লুবনা
টাকা টাকা করে সদা জীবন করো না ফাঁকা, 
জীবনের সুখগুলো নয় সব টাকার গায়ে আঁকা। 
না থাকলে টাকা পেটের জ্বালা, 
সমাজের ভ্রুদুটি হয় বাঁকা, 
ঘুরে না সংসারে উন্নয়নের চাকা, 
একেবারে মূল্যহীন নয় তো টাকা। 
টাকার নেশায় মাতাল হলে বুদ্ধি হবে বাঁকা, 
জীবনের সাফল্য নয় সব টাকার মাঝে রাখা। 
স্রষ্টার স্মরণ ভুলে টাকার সাথে করলে দেখা, 
পরকালের পুলসিরাত হবে অন্ধকারে ঢাকা। 
টাকাকে কর জান্নাতে যাবার পঙ্খিরাজের পাখা, 
রাতের আঁধারে দান কর নিঃস্বে যায় না যেন দেখা।

Tuesday, January 3, 2017

ধীরলয়ে বও

কবি-তাসলিমা রুবি
কায়মনে বলতে থাকি ধীরলয়ে বও
সবটুকু হৃদয় অধিকারে লও।
কামনার গন্ধ খুঁজোনা কোথাও
শুধু ভালবাসা হও,ধীরলয়ে বও।
ঝিরঝির বাতাসের মিষ্টি সুবাস হও
ঝড়ো হাওয়া হয়োনাকো
দিন শেষে ক্ষয়োনাকো
জীবন জুড়ে রও,ধীরলয়ে বও।
একটি গানের কলি,একটি সন্ধ্যা বলি
স্মৃতি হয়ে রও,তবু ধীরলয়ে বও।

বাইরে এসো

কবি-এলিজা আজাদ
বাইরে এসো, একটা পুরুষ শুনতে পেলাম
এদিকওদিক সবখানে চোখ মেলে খুঁজছি
তখন আমার কিশোরীবেলার বাড়ন্ত বয়স
সবে নিজেকে স্বর্ণলতা ভাবতে শুরু করছি
তোমার একটু-কো ছোঁয়া তাতেই
দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে থরথর অসহ্য কাঁপন
বহুবার তলিয়ে গেছি অতলে
দেখি সেই চোখ
চোখ যেন এক যাদুঘর
টেনে নিয়ে যায় কাছ থেকে আরো কাছে ইচ্ছেমত---
আজ আবার সেই কণ্ঠস্বর ভেসে এলো
আমি ছুটে ঘর থেকে বাইরে এলাম
ঘর-বাহির এখন আমার কাছে সমান
এবার আঁকড়ে নেব তাকে সাধ্যের অধিক
হয়তো, তলিয়ে যাব ভয়ঙ্করী ঘূর্ণিপাকে
সুখ-সুখ কিছু ব্যথা নিয়ে আবার ঘরে ফিরব---
সেও ফিরে যাবে নিজেকে হালকা করে।

একটি প্রশ্ন

কবি-এমএইচ প্রিন্স
সভ্য এই সমাজে আজ কেন এতো মিথ্যাচার-দন্দ ? 
সভ্য এই মানুষ গুলো কেন আজ পাপাচারে লিপ্ত ? 
কেন আজ তেমাদের বিবেকের দরজা গুলো বন্ধ ? 
সমাজের সভ্য মানুষ গুলোই আজ কেনো অসভ্য ? 
কিছু ভুলের জন্যে আজ সমাজে অশ্লীলতার গন্ধ ! 
অপরাধ চোখের সামনে রেখেও হয়েছ কেন অন্ধ ? 
মিথ্যাকে প্রশ্রয় দাও তোমরা কোন প্রজন্মের ভন্ড ? 
মুখে সত্যের গুনগান কিন্তুু হৃদয় কেন এতো মন্দ ? 
মিষ্টি মনের মানুষ তোমরা আজ কেন এতো তিক্ত ? 
মমতা, ভালবাসাকে ভুলে হয়েছ অত্যাচারের ভক্ত !
অসভ্যতা,দন্দ,অত্যাচারই কি ছিল এ জাতির মন্ত্র ? 
তোমাদের কাছে আমার শুধু এই একটি মাএ প্রশ্ন ?

Monday, January 2, 2017

অসহায় ছেলে

কবি-এমএইচ প্রিন্স
ওরা বলে আমি নাকি রাস্তার আওয়ারা 
মাঝে মাঝে কেউ বলে অসহায় বেচারা 
মনে মনে ভাবি কতই না অদ্ভুদ 
তোমরা অসহায়, গরিবকে দেখেও দাওনা সাড়া 
বাবাকে হারিয়ে কেন যে আমি মা হারা 
সবাইতো হয়ে গেছে পর শুধু তুমি ছাড়া 
ক্ষনে ক্ষনে ক্ষুধা করে যে আমায় তাড়া 
তৃষ্ণার্ত গলায় ঘুরে যাচ্ছি কতশত পাড়া 
চারপাশে শুধু আমার দূঃখ বেদনা ঘেরা জানি, 
আমাকে বাঁচতে দেবে না তোমরা আমার মতো আর আছে 
কয়জন কারা দূঃখ সব বুকে নিয়ে যে আমি দিশেহারা

নিঃশ্চুপ ভদ্রলোক

কবি-সাজ্জাদ হোসেন সাখাওয়াত
চলছে প্রতিনিয়ত দুর্নীতি চলছে হত্যা,
চলছে গুম দিচ্ছে ফরমালিন হচ্ছে রোগ 
আমরা নিঃশ্চুপ ভদ্রলোক। - 
চলছে ছিনতাই, হচ্ছে ডাকাতি চলছে ধর্ষণ, 
হচ্ছে গুলির বৃষ্টি বর্ষণ চলছে প্রতিনিয়ত 
মাদকাসক্তি রোগ আমরা নিঃশ্চুপ ভদ্রলোক। - 
চলছে ঘুষের রমরমা কারবার 
ভরছে পকেট যারযার,
চলছে টেন্ডার বাজী যৌন পল্লী রাস্তাঘাটে সস্তা আজি 
এরা নিঃশ্চুপ ভদ্র কাজী।:

দ্বিতীয়ার চাঁদ

কবি-তাসলিমা রুবি
আকাশে আজ উঠেছিল দ্বিতীয়ার চাঁদ
ছড়াকার কবিদের বসেছিল হাট।
কানায় কানায় ভরেছিল বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রের ছাদ
গরম গরম লুচি আর চায়ে মুখর ছিল রাত।
কথায় কথায় যে ছড়া কাটে ছড়াকার নাম
হাসি রসে গায় জীবনের গান।
কবিতো ধ্যানী হয় হৃদয়ে সুর বয়
জীবনের ছবি আঁকে কবিতায় রয়।
চায়ের টেবিল জুড়ে প্রিয় সব মুখ
যুক্তি -তর্কে মশগুল খুব।
বিদায়ের ক্ষন এলে সবারই হাত মেলে
নবীন -প্রবীন দাঁড়ায় এক কাতারে
এমন যেন রই সবাই সবার তরে।

শেষ সূর্যাস্ত

কবি-তাসলিমা রুবি
খেরো খাতায় লিখতে চেয়েছিলাম বছরের শেষ দিনটি
চেয়েছিলাম পুরাটা সন্ধ্যা তোমার পাশে বসে কাটাবো।
ধোঁয়া ওঠা কফির কাপে অথবা তোমার ঠোঁটের ইজেলে
লিখবো আমার নাম।
শহর জুড়ে আজ কারপিউ জারী
স্বাধীন দেশে ভালবাসারা বন্দি পাখি
আলো আঁধারির টিকিটে বিকোয় আজ
ভালবাসার সাকী,
শুরা পাত্রে নিঃশেষ রাত্রি
রাত পোহালেই রবে না
কেউ সহযাত্রী।
রাস্তাটা বন্ধ,তাই ধোঁয়া ওঠেনি আজ কফির কাপে
তবু তোমাকে ছুঁই গভীর অনুরাগে!
তুমি নতুন বা পুরনো কোন চিজ তো নও
আমার প্রতিদিনের আপডেট ভালবাসা হয়ে রও।

ভালোবাসি প্রিয়তা

কবি-মামুন আব্দুল্লাহ্
সময় হবে কি প্রিয়তা?
আজ জানাতে চাই এ মনের কিছু কথা,
বদলে নিয়েছ যোগাযোগব্যবস্থা
তাই বেছে নিয়েছি আজ পুরণো প্রথা।
মনে পড়ে কি তোমার
কত দিন পরে লিখছি তোমায় চিঠি?
যদিও আজ সবকিছু হয়েছে ইতি
তবুও ভুলতে পারি না কিছু স্মৃতি।
তুমিও কি পেরেছো ভুলতে
বৃষ্টি ভেজা সেই রাতে
মুখোমুখি বসে দু'জনে
হৃদয়ের কথা বলেছিলে
আকাশের তাঁরা গুনে গুনে।
তোমার অপরূপ চোখে
আমার অপলক থাকিয়ে থাকা দেখে,
ভুবনজয়ী হাসিতে
প্রেমের জোয়ার বইয়ে দিয়েছিলে
মোর শূন্যতায় ভরা হৃদয়ে।
হে প্রিয়তা
আমি ভুলিবো কেমন করে তোমার কথা,
ভুলতে পারলে হতো কি বলো
প্রেমের তাজমহল গড়া?
লাইলীর প্রেমে
মজনু কি হতো পাগলপারা!
আমিও ভুলবো না তোমায়
মরণও যদি এসে যায়,
তুমি রবে নিরবে
মোর হৃদয়ের মণিকোঠায়।

Sunday, January 1, 2017

কল্পলোকের গল্প

কবি-আবুল কালাম আজাদ

কল্পলোকের গল্প তোরা 
শুনবি কে কে আয়— 
সে জগতে যেতে হতো 
ময়ুরপঙ্খী নায় || 

 রূপসুন্দরী একটা নারী 
রাক্ষসেরা ধরে — 
একপলকে নিয়ে গেল 
 সাতসাগরের পরে || 

সেই কুমারী আনবে ফিরে 
যেমন করে হোক— 
উদ্ধার অভিযানে নামে 
সাহসী যুবক || 

সেকালে সব ছিল নাকি 
হাওয়ায় চলা রথ— 
ব্যাঙ্গমারাই চিনতো শুধু 
কল্পলোকের পথ || 

ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমীরা 
পথের কথা বলে — 
পঙ্খীরাজে চড়ে যুবক 
হাওয়ায় উড়ে চলে || 

সাতসাগর আর তের নদী 
পার হয়ে সে যায় — 
পাতালপুরী পৌঁছে শেষে 
ময়ুরপঙ্খী নায় || 

দিনের বেলা রাক্ষসেরা 
যখন ঘুমের ঘোরে — 
ফুড়ুৎ করে শুকপাখি এক 
এলো হঠাৎ করে || 

শুকপাখি কয় নাই কোন ভয় 
সুর্য উঠার পরে — 
একসাথে সব রাক্ষসেরা 
ঘুমায় দিনের তরে || 

সুরক্ষিত গোপন স্থানে 
অনেক যতন করে — 
প্রাণভ্রোমরা রাখে তারা 
সিন্দুকের ভিতরে || 

সিন্দুকটা ডুবিয়ে দিলে 
দম বন্ধ হয়ে– 
একসাথে ঐ রাক্ষসেরা 
মরবে ছটফটিয়ে || 

শুকপাখিটার কথামতো 
যুবক সবই করে — 
সাহসে ভর করে সকল 
রাক্ষস সে মারে || 

রূপকুমারীর খাটে রাখা 
 সোনা-রূপার কাঠি—
 উলট-পালট করলে মেয়ের 
 ঘুম হয়ে যায় মাটি || 

ঘুম টুটলে চমকে সে কয় 
"এ কেমন বিস্ময় — 
রাক্ষস সব করলে খতম 
কে তুমি মশাই" !! 

যুবক বলে বিনয় করে 
"বলবো সবই পরে— 
আগে চল দেশে ফিরি 
পঙ্খীরাজে চড়ে " || 

জান কি সে যুবক নাকি 
ছিল সিন্দাবাদ ? 
তার অভিযান শুনে সবাই 
বললো ' জিন্দাবাদ ' ||

নব বছর

কবি-এমএইচ প্রিন্স
হাজারে সুখ দূঃখের পর এ নতুন বছর 
কত মানুষই আছে শত আশায় কাতর 
সকলের আশাই যেন থেকে যায় অমর 
সুখের খবর ছরায় যেন সুখের ভ্রোমর 
সুখের রাস্তায় থাকবে না দূঃখের মোড় 
দূঃখ কষ্টের থাকবে না যে কোন খবর 
মিষ্টি সুখের হাওয়া ছড়াবে অহর অহর 
সুখের রাজ্যে থাকবে যে সবাই বিভোর 
পুরোনো দিনগুল ভুলে এই নতুন প্রহর 
স্বাগতম ও শুভেচ্ছা তোমায় নতুন বছর