কবি-আবুল কালাম আজাদ
সাত-সাগর আর তের নদী, দুর্গম-গিরিপথ,
বন-আমাজন, মরুসাহারা—
বাধার ঐরাবত ;
অন্ধকারের–
জঠরের বেড়াজালটা ছিঁড়ে,
এসেছি এ ধরণীতে মুষ্টিবদ্ধ করে ||
মুষ্টিবদ্ধ, চক্ষুবন্ধ, গলাফাটা চিৎকার ;
বলেছি,
"হে পৃথিবী, মানো দাবি, দাওআমার অধিকার "|
শুনে তখন বলে কতজন থামা ও মানিক শোর—
আঁখি মেলে দেখ্ আলো ঝলমল সারা দুনিয়া তোর ।
পৃথিবীর সব আমারই ছিল সেই সে শিশুকালে,
বাঁধেনি আমায় তখনো কোন আইনের বেড়াজালে।
হাঁটিহাঁটি পা পা আধো আধো বোল,
ধীরে ধীরে দুরে যায় সোহাগ ভরা কোল।
তবুও শৈশব ছিল সুখ-শান্তিতে ভরা,
তখনো বাঁধেনি কোন জটিল আইনধারা।
দিনের মত দিন চলে যায়, স্বপ্ন কত ভীড়ে,
ইচ্ছাগুলো দোলখেলে শিশু-মন মন্দিরে।
সোনালী, দিপালী, লিলি—
কাকফাটা দুপুরে
সাথী জোটানো ওস্তাদ ছিল চড়ুইভাতির তরে।
নাটাইঘুড়ি, আমচুরি আর ধুলোবালির খেলা ,
কে জানতো কিসের টানে সাঙ্গ হত বেলা।
আস্তে আস্তে বিদায় নিল ছেলেবেলার দিন,
দিনে দিনে বন্দী হলাম নিয়মের অধীন।
স্বপ্নময় সে সময়, রাঙানো সেই বেলা,
কোন অজানায় হারালে সাঙ্গ করে খেলা।
উঁচু-নীচু জীবন টিলা, লক্ষ গিরি খাত,
কোন সুদুরে শৈশব আজো মনকে করে মাত।
রঙে রাঙ্গা দিনের পরে বাউল যৌবন,
বলে যেন মিছেরে মন যৌবনের মৌবন ।
এই জীবনের সারাবেলা, সারা ভবলীলা,
ম্লান করে ঐ শৈশবের এলেবেলে খেলা ||
No comments:
Post a Comment