Tuesday, May 23, 2017

মাটির বাড়ি

কবি-সামিয়া শ্রাবণ
"আমাদের একটা মাটির বাড়ি হবে, আচ্ছা? 
উপরে টিনের চাল। জানালায় থাকবে পুরোনো কাঠের শিক। 
তুমি আর আমি---সে জানালা দিয়ে মেঘলা আকাশ দেখবো। 
কোন একদিন ঘুমের ঘোরে টিনের চালে টুপটাপ শব্দ শুনে বুঝবো 
বৃষ্টি এসেছে আমাদের মাটির বাড়িতে। 
আমাদের একটা মাটির বাড়ি হবে, আচ্ছা? 
পাশের রাস্তা জুড়ে থাকবে ভেজা মাটির গন্ধ। 
কোন এক বর্ষায় আমরা সে পথ ধরে হাঁটবো--একই রাস্তায় 
তুমি হাঁটবে একধার দিয়ে আর আমি অন্যধারে---
এভাবে হাঁটতে-হাঁটতে আমরা পদ্মদীঘিতে পৌঁছুবো তারপর। 
একটা পুকুর থাকবে--যেখানে মধ্যরাতে চাঁদের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। 
বাড়ির সামনে একটা মাটির উঠোন থাকবে--
সে উঠোনের ধারে থাকবে একখানা ভাঙা চৌকি---
আমরা সে চৌকিতে বসে পূর্ণিমা দেখবো। 
অদূরে থাকবে নোংরা ডোবা -- 
যেখানে বৃষ্টি হলে ব্যাঙেদের ঘ্যাঙর- ঘ্যাঙ আওয়াজ শোনা যায়। 
ঝিঁঝিঁ পোকা আর জোনাকিরা আমাদের জানালায় ভীড় জমাবে খুব। 
বুনো বেলি ফুটে থাকবে আমাদের মাটির দেয়ালের ধারে। 
কোন এক রাতে আমার অগোছালো এলোমেলো চুলে 
সে বেলির কয়েকটা এনে গুঁজে দিবে তুমি, আচ্ছা? 
 হঠাৎ এসব কথা মনে পড়ে গেলো চল্লিশ বছর বয়স্কা রমণীর। 
তাদের বোধ হয় একটা মাটির বাড়ি হওয়ার কথা ছিল। 
কাঁচের জানালায় বৃষ্টির প্রতিচ্ছবিতে হঠাৎ গোল ফ্রেমের চশমাটা 
ঘোলাটে হয়ে আসলো তার। 
অগোছালো চুল ঠিকই আছে--শুধু ভাঙা চৌকির 
জায়গা দখল করে আছে বিলাসবহুল হেলানো চেয়ার। 
 বেলির জায়গায় সেখানের ফুলদানিতে সাজানো --কিছু বুনো অর্কিড। 
অবশেষে "তুমি" আর "আমি" মিলে তারা কখনো "আমরা" হতে পারেনি......

No comments:

Post a Comment